রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১৮ অপরাহ্ন

ক্লাব, মদ নিয়ে উত্তপ্ত সংসদ

ক্লাব, মদ নিয়ে উত্তপ্ত সংসদ

স্বদেশ ডেস্ক: হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ওঠে জাতীয় সংসদ। বিতর্কের বিষয় ক্লাব, মদ ও জুয়া। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বৈঠকের শুরুতে এই অনির্ধারিত আলোচনায় আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও তরিকত ফেডারেশনের পাঁচ সাংসদ অংশ নেন।
আলোচনার সূত্রপাত করেন জাতীয় পার্টির সাংসদ মুজিবুল হক। তিনি চিত্র নায়িকা পরীমনির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। তিনি বলেন, যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটা বোট ক্লাব। কে করল এই ক্লাব? এই ক্লাবের সদস্য কারা হয়? শুনেছি, ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা দিয়ে এ ক্লাবের সদস্য হতে হয়। এত টাকা দিয়ে কারা ক্লাবের সদস্য হন? আমরা তো ভাবতেই পারি না।
তিনি আরো বলেন, এসব ক্লাবে মদ খাওয়া হয়। জুয়া খেলা হয়।

বাংলাদেশে মদ খেতে হলে লাইসেন্স লাগে। সেখানে গ্যালন-গ্যালন মদ বিক্রি হয়। লাইসেন্স নিয়ে খেতে হলে এত মদ তো বিক্রি হওয়ার কথা নয়। তিনি প্রশ্ন রাখেন, সরকারি কর্মকর্তারা কীভাবে এসব ক্লাবের সদস্য হন? এত টাকা কোথা থেকে আসে?

জাতীয় পার্টির এই সাংসদ বলেন, গুলশান-বারিধারা এলাকায় ডিজে পার্টি হয়। সেখানে ড্যান্স হয়। নেশা করা হয়। মদ খাওয়া হয়। এসব আমাদের আইনে নেই, সংস্কৃতিতে নেই, ধর্মে নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলব, আপনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন, কেন এসব হচ্ছে? কেন এগুলো বন্ধ করা হবে না? ওই সব ক্লাবের সদস্য কারা হয়?
মুজিবুল হকের বক্তব্যের পর সংসদে ফ্লোর নেন সরকারি দলের জ্যেষ্ঠ সাংসদ শেখ ফজলুল করিম সেলিম। তিনি বলেন, এ তো বোট ক্লাব। জিয়াউর রহমান স্টিমার ক্লাব করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু মদ-জুয়ার লাইসেন্স বন্ধ করে দিয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান আবার দিয়েছিলেন। হিজবুল বাহার করেছিলেন। যারা অপরাধের শুরু করেছেন, তাদের আগে বিচার করা উচিত। ওখান থেকে ধরতে হবে।
শেখ সেলিমের বক্তব্যের জবাবে বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, ‘আমাদের বিরোধীদলের এক সংসদ সদস্য (মুজিবুল হক) একটা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু সিনিয়র এক সদস্য (শেখ সেলিম) কোথায় চলে গেলেন?
হারুন আরও বলেন, বিদেশি কূটনীতিক, ডোম ও বিভিন্ন ধর্মের মানুষের জন্য জিয়াউর রহমান মদের বৈধতা দিয়েছিলেন। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন যে জিয়াউর রহমান মুসলমানদের জন্য মদের লাইসেন্স দিয়েছেন, তাহলে তিনি সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করবেন।
হারুন বলেন, মন্ত্রী-এমপিরা নন, সব থানার পুলিশ এসব ক্লাব থেকে টাকা নেয়। এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
হারুনের বক্তব্যের জবাবে আবার সংসদে ফ্লোর নেন শেখ সেলিম। তিনি বলেন, লাকী খানের নাচের কথা কি ভুলে গেলেন? হিজবুল বাহার? জিয়াউর রহমান এগুলো করেছিলেন। এসবের জন্য বিএনপি দায়ী। সত্যকে স্বীকার করে নিতে হবে।
এরপর তরিকত ফেডারেশনের সাংসদ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, হারুন সাহেবের সদস্যপদ আজই ছেড়ে দেওয়া উচিত। উনি বললেন, জিয়াউর রহমান মুসলমানদের মদ খাওয়ার পারমিশন দেননি। উনি দেখাক, আইনে কোথায় বলা আছে, মুসলমানরা মদ খেতে পারবেন না। আইন এখানে এনে দেখাক। পদ ছেড়ে দিক।
এরপর জাতীয় পার্টির সদস্য ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু লাইসেন্স দেননি। তারপর আইনটার অপব্যবহার হচ্ছে। একজন চিকিৎসক দিয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে নেয়, জীবন বাঁচানোর জন্য প্রতিদিন মদ খেতে হবে। তারপর লাইসেন্স নেওয়া হয়। বিএনপি এই লাইসেন্স দিয়েছিল।
ইসলামিক বক্তা আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনানকে খুঁজে বের করার দাবি জানান মশিউর রহমান। এ ছাড়া পরীমনির মামলার পর গ্রেপ্তার জাতীয় পার্টির সভাপতিম-লীর সদস্য নাসির উদ্দিন মাহমুদের বিষয়ে তিনি বলেন, একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিচার হবে। দোষী হলে শাস্তি হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877